স্বদেশ ডেস্ক:
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন কূটনীতিকদের মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার অনুরোধ করেছেন। তিনি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের জন্য ইসিকে প্রভাবিত করার অনুরোধ করেছেন।
গতকাল রোববার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি এ অনুরোধ জানান। তিন পাতার চিঠির কথা স্বীকার করেছেন জায়েদা খাতুনের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম। ইংরেজিতে লেখা জায়েদা খাতুনের চিঠিটি চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০২৩ পর্যবেক্ষণ করা এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ বেশ কয়েকটি দাবি বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানানোর আহ্বান জানানো হয়।
এ ছাড়া নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার অনুরোধ জানানো হয়।
এর আগে জায়েদা খাতুন নির্বাচন কমিশন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, রিটার্নিং অফিসারসহ অন্যদের কাছে একই দাবিতে চিঠি দেন।
চিঠিতে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমি জায়েদা খাতুন আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমি গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমের মা। আপনারা সবাই অবগত আছেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আমার ছেলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নির্বাচিত মেয়র অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। আমার ছেলের প্রতি যে অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে, তার প্রতিবাদ করতে ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাজীপুরে আমি আমার নির্বাচনী প্রচারণায় নামলেই লাখো মানুষ আমার প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। আমি ৯ মে প্রতীক পাওয়ার পর থেকে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত অ্যাড. আজমত উল্লা খান আমাকে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন। আমার জনসংযোগে হামলা করছেন এবং আমার নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত পোলিং এজেন্ট এবং সম্ভাব্য পোলিং এজেন্টদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন।’
চিঠিতে জায়েদা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘আজমত উল্লা খান তার সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে আমার গণসংযোগের সময় গাড়িবহরে বাধা দিচ্ছেন এবং তার পক্ষে (নৌকার) উস্কানিমূলক শ্লোগান দিচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরা অযথা বিভিন্ন স্থানে আমার নির্বাচনী প্রচারণাকে অবৈধভাবে বাধা দিচ্ছে ও হয়রানি করছে। আমি এ সব ঘটনা জানিয়ে একাধিকবার নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ করেছি। এ বিষয়ে আমি ১৮ মে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
চিঠিতে জায়েদা আরও বলেন, ‘সর্বশেষ গত ১৮ মে বিকেলে মহানগরীর টঙ্গীর ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগকালে আজমত উল্লা খানের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার গাড়িবহরকে বাধা দেয় এবং আমার নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি ভাঙচুর করে। এ সব কারণে আমি বিদেশি কূটনীতিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য এবং সেনা মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে চাপ সৃষ্টি করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা চাই একটা অবাধ, সুষ্ঠু, গঠনমূলক নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনার বলেছেন সুষ্ঠু ভোট করবে। তিনি বলেছেন, সিসি ক্যামেরা দিবে, ইভিএম’এ ভোট হবে। যার ভোট সে দিবে, যে ভোট পাবে তার নামে ডিক্লিয়ার হবে। আমরা এটাই চাই। ওনারা যে কমিটমেন্ট করছে ওইটার বাস্তবায়ন চাই।’